জানা গেছে, খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি পাটকলের মধ্যে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, ইস্টার্ন এবং জেজেআইতে পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। পাটকলগুলোর আয় থেকেই এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ও কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিদ্যালয়গুলো টিকিয়ে রাখা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয়গুলোর স্থায়ী শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির আশ্বাস দেন পাট প্রতিমন্ত্রী।
শিক্ষকরা জানান, পাটকলের বিদ্যায়লগুলোতে নিয়মিত শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৬০ জন। এর বাইরে আরও ৬০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ১০ জন কর্মচারী অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করেন। তাদের মধ্যে ১৫-২০ বছর ধরে কাজ করলেও অনেককে স্থায়ী করা হয়নি। তাদের অনেকেরই এখন চাকরির বয়স নেই। পাটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা অথৈই সাগরে পড়েছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত স্টার জুট মিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাজা খান বলেন, ‘২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছি। স্থায়ী হবে হবে করে সাড়ে আট বছর পেরিয়ে গেছে। এখন আর বাইরে চাকরির বয়স নেই। মিল বন্ধ হওয়ায় আমাদের ভাগ্যে কি আছে জানি না।’
প্লাটিনাম জুট মিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিরিনা খানম জানান, ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে তিনি শিক্ষকতা করছেন। গত ২০ বছরে তাকে স্থায়ী করা হয়নি। এখন তাদের এমপিওভুক্তি করা হবে না বলে শুনছেন।
শিক্ষকরা জানান, প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলেই এসব শিক্ষকদেরও এমপিওভুক্ত করতে পারেন। তাদের বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
এ ব্যাপারে স্টার জুট মিলের প্রকল্প প্রধান আবুল কালাম আজাদ জানান, বিজেএমসি থেকে স্থায়ী শিক্ষকদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তখন অস্থায়ী শিক্ষকদের বিষয় জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এখন বাকি দায়িত্ব বিজেএমসির।
এদিকে, বন্ধ ঘোষিত পাটকল বিদ্যালয়গুলোতে কর্মরত অস্থায়ী শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। বুধবার প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেয়া স্মারকলিপিতে স্থায়ী শিক্ষকদের সাথে তাদেরও স্থায়ী করার দাবি জানানো হয়। খুলনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি পাঠানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম ও স্টার জুটমিল বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন ৪০ জন অস্থায়ী শিক্ষক-কর্মচারী। তারা দীর্ঘ ১০-১৫ বছর ধরে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান করছেন। এছাড়া পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনসহ সরকারের সব ধরণের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করেছেন। এ অবস্থায় চাকরি চলে গেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। এজন্য তাদের চাকরিও এমপিওভুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়।